৭৫ বছর বয়সী বাবা হামেদ আকন নামের এক বৃদ্ধকে জিরাত আকন ও তার লোকজন মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিপু আকন এমন অভিযোগ করেন।আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামে প্রেমিকাকে নিয়ে পালিয়ে যায় ছেলের বৃদ্ধ বাবাকে মারধর করেন মেয়ের পরিবার।
বৃদ্ধকে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তার পরিবার ও এলাকাবাসী।রোববার বিকালে এ ঘটনায় আমতলী থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়।
জানা গেছে, উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামের হামেদ আকনের ছেলে নিপু আকন পার্শ্ববর্তী কুলইরচর গ্রামের রাজ্জাক মোল্লার মেয়ে মনিরার সঙ্গে গত দশ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। ২০১৮ সালে তারা পটুয়াখালী আদালতে নোটারির মাধ্যমে বিয়ে করেন। ২০২০ সালে পুরনায় তারা আবার কাবিন করে বিয়ে করেন। কিন্তু এ বিয়ে মেয়ের বাবা রাজ্জাক মোল্লা মেনে নেয়নি।গত ১৫ দিন পূর্বে রাজ্জাক মোল্লা তার মেয়েকে একই গ্রামের রিয়াজ চৌকিদারের কাছে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। মেয়ে মনিরা নিপু আকনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়ে গেছে বলে রিয়াজকে জানিয়ে দেয়। কিন্তু রিয়াজ তার কথা বিশ্বাস করেনি। মেয়ের বাবা রিয়াজের সঙ্গে তাকে বিয়ে দিতে উঠেপড়ে লেগে যায়।
নিরুপায় হয়ে মনিরা তার স্বামী নিপু আকনের সঙ্গে গত ২২ মে চলে যায়। এ ঘটনার জের ধরে শনিবার বিকালে নিপু আকনের বাড়িতে যান মনিরার ভগিনীপতি জিরাত আকন, রিয়াজ চৌকিদার ও আসিব। নিপু আকনের বৃদ্ধ বাবা হামেদ আকনকে তারা ঘর থেকে তুলে আনেন। পরে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। তাদের নির্যাতন থেকে রক্ষায় দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করেন বৃদ্ধ হামেদ। কিন্তু তাড়া করে তাকে বেধড়ক মারধর করেছে জিরাত আকন ও তার লোকজন।
তাকে রক্ষায় পুত্রবধূ তানিয়া আক্তার এগিয়ে এলে তাকেও তারা মারধর করেছে- এমন অভিযোগ বৃদ্ধ হামেদ আকনের। এ ঘটনার পর বৃদ্ধ হামেদ আকনকে স্বজনরা উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
এ ঘটনায় রোববার বিকেলে বৃদ্ধ হামেদ আকনের বড় ছেলের স্ত্রী তানিয়া আক্তার আমতলী থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
নিপু আকন বলেন, মনিরা ও আমি উভয়কে ভালোবাসি। আমরা দুজনে দুইবার বিয়ে করেছি। কিন্তু আমাদের বিয়ে মনিরার পরিবার মেনে নেয়নি। উল্টো তারা মনিরাকে রিয়াজ চৌকিদারের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। উপায় না পেয়ে আমার গত ২২ মে পালিয়ে এসে সংসার শুরু করেছি।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মনিরার ভগিনীপতি ও রিয়াজ চৌকিদারসহ ৩-৪ জনে আমার বাবাকে নির্মমভাবে মারধর করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
রাজ্জাক মোল্লা বলেন, আমার মেয়েকে নিপু আকন তুলে নিয়েছে। তুলে নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি আমার মেয়েকে একটি রুমে আটকে রেখে তার মনের বিরুদ্ধে নাচিয়েছে। ওই নাচের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার জামাতা ও নাতি নিপুর বাড়িতে গিয়ে তার বাবার কাছে জানতে চেয়েছে। ওই সময় একটু কথাকাটাকাটির ঘটনা ঘটেছে।
আমতলী থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান বৃদ্ধকে মারধরের ভিডিও ভাইরালের কথা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মনিরা আক্তার বলেন, আমি আমার স্বামী নিপুর সঙ্গে এসেছি। আমাকে তিনি তুলে আনেননি।